
সন্তানের সুখি,সমৃদ্ধময় এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা প্রজন্ম পরম্পরা প্রতিটি পিতা-মাতার লালিত স্বপ্ন।এই স্বপ্নটিকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রতিটি পিতা-মাতা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন।বাংলা সাহিত্যে “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে” পঙ্কতিটি পিতা-মাতার লালিত এই স্বপ্নটির যথাযথ প্রকাশ।কিন্তু এই স্বপ্নটি পূরণে রয়েছে বেশ কিছু বাস্তবিক বাধা এবং প্রতিবন্ধকতা।এই প্রতিবন্ধকতাগুলোর ব্যাপারে অসচেতনতা আমাদের সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।সুতরাং,সঠিকভাবে প্যারেন্টিং করার জন্য শিশু বিকাশের বর্তমান সমস্যাগুলোকেও বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
১. হাতের পাঁচ আঙুল যেমন সমান হয় না তেমনি পাঁচ আঙ্গুলকে টেনে এক সমান করা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচতি নয় কারন প্রত্যেকেটি শিশুই আলাদা। প্রত্যেকের রয়েছে ভিন্ন রকমের সম্ভাবনা এবং প্রতিবন্ধকতা।তাই প্রতিটি শিশুকে আলাদাভাবে সার্বিক পর্যবেক্ষণ এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত ইন্টারভেনশন ডিজাইন এবং বাস্তবায়ন গুরুত্বর্পূণ।
২. আমরা পচ্ছন্দ করি বা না করি,বর্তমান সামাজিক কাঠামো আমাদের সন্তানের সার্বিক বিকাশের বড় অন্তরায়।সুসংহত যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে একক পরিবার হওয়ার কারণে সন্তানরা পরিবারের বাকী সদস্যদের সেবা বিশেষ করে পরিবারের সিনিয়ার সদস্য যেমনঃ দাদা-দাদি, চাচা-চাচীর বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।এছাড়া পূবের্র সমাজ ব্যবস্থায়, সামাজে পরিবারের বাইরের অনেক মানুষ (যেমনঃ প্রতিবেশি, এলাকার মুরুব্বি,মসজিদের ইমাম,শিক্ষক, এমনকি মোড়ের দোকানদার) শিশু-কিশোরদের প্রাত্যহিক র্কামকান্ডে গাইড/মেন্টরের ভূমিকা রাখত।বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় সম্ভাব্য নিরাপত্তার ঝুঁকি এই প্রতিষ্ঠানগুলো অনেকাংশে অকার্যকর।ফলে বর্তমানে সন্তানের বিকাশের গুরু দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে পিতা-মাতার উপর অর্পিত।
৩. অন্যদিকে, আর্থসামাজিক বাস্তবতার কারণে প্রায় সকল পরিবারে পিতা-মাতা দুইজনকেই দিনের উল্লেখযোগ্য সময় ব্যয় করতে হচ্ছে জীবিকা অর্জনের জন্য।এই বিষয়গুলো ছাড়াও কুসংস্কার, অসেচতনতা,পর্যাপ্ত সঠিক জ্ঞানের অভাব,গতানুগতিক চিন্তা ভাবনা, সমস্যাকে সমাধান না করে এড়িয়ে যাওয়ার মনোভাব ইত্যাদি আরও কিছু অনিবার্য বাস্তবতা আমাদের সন্তানদের বিকাশকে বাধাগুস্থ করছে।এই বাধাগুলো দূর করে আমাদের সন্তানদের আগামীর পথ চলাকে সুগম এবং আনন্দদায়ক করার জন্য গবেষণা, তথ্য নির্ভর ও বিজ্ঞান সম্মত সেবা প্রদান করার জন্য আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস “আমার সন্তান”।